“উত্তরআধুনিকতা এখন চিন্তাজগতে একটি আলোচিত বিষয়। অ্যাকাডেমিক অঙ্গনেও পাঠ্যসূচির সাথে সংযুক্ত হয়ে পড়েছে অনেকখানি। ফুকো, দেরিদা, লিওতার এখন চিন্তার জগতে বহুল উচ্চারিত নাম। উত্তরআধুনিকতার বিভিন্ন স্তরের অবতার হিসেবে মান্য করা হয় তাঁদের।
তবে উপরোক্তদের চিন্তার মতোই সামগ্রিকভাবে উত্তরআধুনিকতা খুব সহজবোধ্য বিষয় নয়। এমনকি যারা নিজেদের উত্তরআধুনিক বলে ভাবতে ভালোবাসেন, নিজেদের উত্তরআধুনিক বলে পরিচয় দিতে চান, তারাও এই বিষয়টি সম্পর্কে পরিচ্ছন্নভাবে কোনো ধারণা দিতে সক্ষম হন না। না লিখিতভাবে, না আলোচনার মঞ্চে, না চায়ের টেবিলের আলোচনায়।
কারণটা আসলে নিহিত রয়েছে উত্তরআধুনিকতার মধ্যেই। এটি অপরিচ্ছন্ন, অপরিষ্কার একটি ধারণা, যা দার্শনিক প্রত্যয়ে পরিণত হবার আকাঙ্ক্ষা রাখে, কিন্তু দার্শনিকতার শর্তগুলো পূরণের তাগিদ তার নেই।
পৃথিবীর জীবিত চিন্তাবিদদের মধ্যে অন্যতম নোয়াম চমস্কি উত্তরআধুনিকতাকে অভিহিত করেন স্রেফ ধাপ্পা হিসেবে। তবে এককথায় উত্তরআধুনিকতাকে উড়িয়ে না-দিয়ে তার উৎপত্তির ইতিহাস এবং পটভূমি বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে মানুষের প্রগতিচিন্তাকে ঘোলাটে করে তোলার ক্ষেত্রে উত্তরআধুনিকতা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে।
মানুষের শোষণমুক্তির সন্ধান এবং সংগ্রামকে গৌণ করে রাখতে চায় উত্তরআধুনিকতা। তাই প্রগতিশীল চিন্তাবিদদের খুব নিবিড়ভাবে ব্যবচ্ছেদ করতে হয়েছে উত্তরআধুনিকতাকে। সেই ব্যবচ্ছেদ এবং উত্তরআধুনিকতার স্বরূপ তুলে ধরা ঋদ্ধ আলোচনার সমষ্টি নিয়েই এই সংকলন ‘প্রতিপাঠ : উত্তরআধুনিকতা”। চিন্তাশীল পাঠকের জন্য এই আলোচনাগুলো অপরিহার্য।”
Reviews
There are no reviews yet.