কি প্রাচীন কি জানি কি আধুনিক সমস্ত সভ্য সমাজেই শিক্ষা ব্যাপারটা লইয়া নানা রকম সমস্যা উঠিয়াছে। শিক্ষার লক্ষ্য কি হওয়া উচিত, আর সে লক্ষ্যে পৌছার সুব্যবস্থাই বা কি এ দুই বিষয়েই যথেষ্ট মতভেদ আছে। এবং দুইটী রাশিই যদি অব্যবস্থিত হয়, তবে তাহাদের সমবায়ে কেমন জটিল বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয় তাহা গণিতের সাহায্য ব্যতীতও সহজেই বোঝা যায়। আর এ বিষয়ে মতভেদও অতি স্বাভাবিক; বরং মতের প্রকার ভেদ কিছু কম হইলেই বিস্ময়ের কারণ হইত। একে তো শিক্ষা জিনিসটী, তা তার প্রণাল সে রকমই হোক, অনেকটাই অজানা মাটিতে বীজ ছড়াইয়া ফসলের আশায় বসিয়া থাকার মত। কোন জমিতে যে কেমন বীজে কোন ফল ফলিবে তা পূর্ব্ব হইতে নিশ্চয় জানিবার উপায় নাই। যে পথে চলিয়া বৈদ্য চিকিৎসক হয় বলিয়া নিন্দুক লোকে রটায়, সেই ঠেকিয়া শেখার পথটা এখানে অনেকটা সঙ্কীর্ণ, কেননা এক জমিতে দুইবার বীজ বুনিবার উপায় নাই। এবং শিক্ষার তত্ত্ব ও শিষ্যের মত সম্বন্ধে প্রচুর পুথি ও পাণ্ডিত্য থাকা স্বত্ত্বেও, যে মন লইয়া শিক্ষককে কাজ করিতে হয়, কোনও বৈজ্ঞানিক আচার্যে যন্ত্রের মধ্যে তাহা দেয় না। সমস্ত মনস্তত্ত্বই সাধারণ মনের তত্ত্ব, অর্থাৎ যে মন কল্পনায় আছে কিন্তু বস্তুগত্যা নাই। আর শিক্ষকের কারবার হইল বিশেষ মনকে লইয়া, যাহা এই নিয়মের জগতে প্রায় খাপছাড়া অনিয়ম, যাহার বিকাশ ও বিকারের রীতি দর্শন শাস্ত্রের ভাষায় গ্রহাস্থিত ও দুর্জ্ঞেয়। সেই জন্য দেখা যায় অতি-অবৈজ্ঞানিক সেকেলে ধরণের শিক্ষা প্রণালীর মধ্য দিয়াও মানুষের মন বিকশিত হইয়া ওঠে, আবার অত্যন্ত টাটকা বৈজ্ঞানিক প্রণালী ও ইহার ‘সনাতন জড়তায়’ ঠেকিয়া ব্যর্থ হইয়া যায়। কাজেই কোনও প্রণালীরিই ফলটা প্রবর্ত্তকের আশানুযায়ী বা নিন্দুকের ভবিষ্যৎ বাণীর অনুরূপ পুরাপুরি রকমে ফলে না। –অতুলচন্দ্র গুপ্ত
Sale!
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.
Reviews
There are no reviews yet.