মনোবিজ্ঞান বিকাশের ইতিহাসটি অত্যন্ত জটিল; বিজ্ঞান, দর্শন ও শারীরতত্ত্ব এই তিনটি পৃথক জ্ঞানের বিকাশ তাকে প্রভাবিত ও পরিচালিত করেছে বলে বিজ্ঞানের খুব কম শাখাতেই এত বিচিত্র ও পরস্পরবিরোধী ঘরানার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই ধারাগুলো মৌলিকভাবেই ভিন্ন কতগুলো সিদ্ধান্ত ও পরীক্ষার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে এই বিষয়ে পাঠকের উৎসাহের অভাব না থাকলেও যোগ্য আলোচনার ঘাটতি বরাবরই ছিল। “সামাজিক চেতনার মনস্তত্ত্ব’ সেই শূন্যতা পূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। মানবদেহ ও স্নায়ুতন্ত্রের বৈজ্ঞানিক আলোচনা থেকে শুরু করে ব্যক্তির চেতনার গঠন কোন শর্তাধীনে হয় এবং শেষ পর্যন্ত সামাজিক যৌথচেতনার বহিঃপ্রকাশের নিয়ামকগুলো কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। এই আলোচনা করতে গিয়ে পাঠকের সামনে তুলে ধরতে হয়েছে আচরণবাদ, জ্ঞানবাদ, জৈবমনস্তাত্ত্বিক ধারা, মনোবিজ্ঞানের ঐতিহাসিক দার্শনিক পটভূমি, দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী ধারার বিস্তারিত পর্যালোচনা।
বিরঞ্জন রায় ব্যক্তিগতভাবে একজন চিকিৎসক হিসেবে মনোবিজ্ঞান চর্চার সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর পেশাগত অর্জন ও অভিজ্ঞতা এবং নিবিড় অধ্যয়নের গুণে বর্তমান গ্রন্থটি কেবল মনোবিজ্ঞানের ঐতিহাসিক পর্যালোচনায় পর্যবসিত হয়নি। বরং তাঁর এই গ্রন্থটিতে তিনি বাংলাদেশের নির্দিষ্ট প্রেক্ষিত যেমন মনে রেখেছেন, তেমনি আমাদের চেনা অনেকগুলো বাস্তবতারও ব্যাখ্যা হাজির করেছেন মনোবিজ্ঞানীর দৃষ্টি থেকে।
মনোবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক ও পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ বাংলাভাষায় বিরল। ‘সামাজিক চেতনার মনস্তত্ত্ব’ গ্রন্থটি মনের বিজ্ঞান নিয়ে উৎসুক চিকিৎসক-গবেষক-লেখক সকলের অভাব মেটাবে বলে আমরা মনে করি।
Reviews
There are no reviews yet.