মানবতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পৃথিবীর পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয় উপকরণ, সামর্থ্য ও প্রযুক্তি আমাদের কাছে রয়েছে। আজ আমাদের যে আরাম, স্বাচ্ছন্দ্য ও সুবিধা রয়েছে তা আগের কোনো প্রজন্ম কখনো পায়নি। তবুও আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে আনন্দময় বা ভালোবাসায় পূর্ণ প্রজন্ম বলে দাবি করতে পারি না। নানাভাবে এই প্রজন্ম সবচেয়ে বিকারগ্রস্ত বা অসন্তুষ্ট প্রজন্মে পরিণত হয়েছে। কারণ আমরা বাইরের জগতের যত্ন নিয়েছি, নিজের অন্তরের যত্ন করিনি। আমরা যেভাবে চাই পৃথিবীকে সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমারা কি তেমন হতে পেরেছি, যেমন আমরা চাই?
আমরা প্রত্যেকেই স্বাস্থ্য, সুখ, শান্তি ও আনন্দ চাই। পৃথিবীকে আনন্দে পরিপূর্ণ করতে অনেক কিছুর প্রয়োজন হলেও মানুষের অন্তরকে আনন্দে পরিপূর্ণ করতে তেমন কোনোকিছুর প্রয়োজন হয় না। প্রত্যেক মানুষ চাইলেই নিজেকে আনন্দে পরিপূর্ণ রাখতে পারে। কিন্তু এই সহজ ব্যাপারটি ঘটছে না। কারণ, আমরা কখনো আমাদের অন্তরের দিকে নজর দেইনি।
অসংখ্য মানুষ সবসময় উদ্বেগ ও হতাশার মধ্যে বাস করে। তাদের জীবনে আনন্দ একটি বিরল ব্যাপার। কেউ কেউ তাদের ব্যর্থতার জন্য কষ্টভোগ করছে এবং হাস্যকরভাবে অনেকে তাদের সাফল্যের জন্য কষ্টভোগ করছে। কেউ কেউ তাদের সীমাবদ্ধতার জন্য কষ্টভোগ করছে এবং অনেকে তাদের স্বাধীনতার জন্য কষ্টভোগ করছে। মানুষের অন্য সবকিছু ঠিক আছে, কেবল চেতনা হারিয়ে সঠিক পথে নেই। মানুষ যদি নিজেদের সুখের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করত, তাহলে অন্যান্য সকল সমাধান হাতের কাছে পেত। মানুষের আনন্দ, দুর্দশা, ভালোবাসা, অন্তর্বেদনা, সুখ, সত্য, মিথ্যা সবই নিজের হাতে। নিজেকে রূপান্তর করা ছাড়া বিশ্বকে রূপান্তর করা সম্ভব নয়।
আনন্দ কোনো অধরা আধ্যাত্মিক বিষয় নয়। আনন্দ কেল পারিপার্শ্বিক অবস্থার পটভূমি, যা জীবনের যে-কোনো ক্ষেত্রে যাদুর মতো আশ্চর্যজনকভাবে উদ্ভাসিত হতে পারে। আনন্দ জীবনের বাতাবরণ না-হলে জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক কর্মকাণ্ডও দুর্বহ হয়ে ওঠে। জীবনের চারপাশের সমস্যাগুলো জীবনের শ্রেষ্ঠ সক্ষমতাকে শনাক্ত করতে পারে। কিন্তু একবার আনন্দ জীবনের চিরসহচর হয়ে গেলে, জীবনে আর কোনো সমস্যা থাকে না। জীবন মহা উৎসব ও অনুসন্ধানের অন্তহীন যাত্রায় পরিণত হয়। আর সেই অন্তহীন যাত্রার আলোর পথযাত্রী হওয়ার উপায় হল ইনার ইঞ্জিনিয়ারিং।
Reviews
There are no reviews yet.