মনা অন্তর্জগতে বসবাসকারী মানুষের অবয়ব নিয়ে একজন অতিমানব, কিংবা আত্মার বিজ্ঞানী লালনের ভাষায় বলা যায়–সহজ মানুষ, মনের মানুষ, পরম মানুষ। প্রকৃতির রূপ, রস, গন্ধ নিয়ে মহাজাগতিক বিশ্বের সাথে অন্তর্লীন হয়ে থাকা এক বাউল। যে সংসারে থেকেও সংসারে নেই, কর্মে ডুবে থেকেও কর্মে নেই, প্রেমের মহাসমুদ্রে ডুবে থেকেও প্রেমহীন এক বিচিত্র মানুষ। জীবনে গান ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারেনি।
একজন সাধারণ রাজমিস্ত্রী, কর্মসূত্রে পরিচয় হয় মালিকের মেয়ে পুষ্পিতার সাথে। পুষ্পিতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ছাত্রী। বাড়ি নির্মাণের অগ্রগতি দেখতে গিয়ে মনা বাউলের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যায়। একদিন মনার প্রজ্ঞাপূর্ণ আলোচনা, ইলমে মারেফত সম্পর্কিত আধ্যাত্মিক আলোচনা এবং সংগীত কীভাবে হৃদয় দিয়ে গাইতে হয়, ইন্দ্রিয়ের বাইরেও অতিন্দ্রীয় মনোজাগতিক বিশ্বের সাথে একাত্ম হয়ে শুনতে হয়। এতসব ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ শুনে পুষ্পিতা ও তার সহপাঠীদের মনে ও মননে ভীষণ আলোড়ন সৃষ্টি করে। মনার ধর্মীয় ব্যাখ্যাসহ মুক্ত আলোচনা শুনেও তারা চমকিত হয়।
সাত ঘাটের জল খাওয়া মনা বহু ঋদ্ধ সাধকের সংস্পর্শে থেকে পরম মানুষে রূপান্তরিত হয়। পুষ্পিতার একদিন ইচ্ছে হলো–মনাকে বাজিয়ে দেখবে। তার শরীরের ভাষা শুনবে, সেই রাতে মনা দেবতা থেকে মানুষ হয়ে জেগে ওঠে। এতে পুষ্পিতা একটু অহংকারী হয়ে বলে–
‘কি বাউল তোমাকে মাটিতে নামিয়ে আনলাম,
আজ যে পাথরকেও গলিয়ে দিলাম।’
মনা লজ্জিত হয়। এই ঘটনার কয়েকদিন পর পুষ্পিতার অনুশোচনা হয় এবং মনার সাথে দেখা করতে গিয়ে জানতে পারে–মনা সৌদি আরব চলে গেছে। ভাববিহ্বল হয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
Sale!
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.
Reviews
There are no reviews yet.